হাইপারসোমনিয়া

সারাংশ

হাইপারসোমনিয়া হল দীর্ঘস্থায়ী স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি, যেখানে একজন হয়তো দীর্ঘক্ষণ ধরে রাতের ঘুম অথবা দিনের বেলা অত্যাধিক ঘুমভাব উপলব্ধি করতে পারেন। যাঁরা অপর্যাপ্ত অথবা অশান্ত ঘুমের কারণে ক্লান্ত বোধ করেন তাঁদের তুলনায় যাঁরা হাইপারসোমনিয়ায় ভোগেন তাঁরা সারারাত ঠিক কমে ঘুমনো সত্ত্বেও দিনের বেলা লম্বা ঘুম দিতে বাধ্য বোধ করেন। হাইপারসোমনিয়া প্রায়শই অন্য রোগের সাথে জড়িত আর তা রোগীর দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে।

উপসর্গ

● সর্বক্ষণ দিনের বেলা অত্যাধিক ঘুমানো বা ঘুম ভাব
● কাজকর্ম, খাওয়া অথবা এমনকি কথপোকথনের মধ্যের মতো অসময়ে বারবার হালকা ঘুমিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা
● দিনের বেলা অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নিলেও অত্যাধিক ঘুমভাব কমে না, আর লম্বা ঘুমের পর প্রায়শই বিভ্রান্তিবোধ এবং অস্বস্তি লাগা
● উদ্বিগ্নতা
● বিরক্তি বেড়ে যাওয়া
● উদ্যম কমে যাওয়া
● মন্থর চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়া এবং কথাবার্তা, যা সারাদিন ধরে থাকে
● ক্ষুধামন্দা
● কোনও পারিবারিক অথবা সামাজিক সমাবেশ এবং পেশাদারী পরিবেশে কাজ করতে অসুবিধা

চিকিৎসা

অন্যান্য স্নায়বিক ব্যাধির মতোই হাইপারসোমনিয়ার কারণও ভালো করে জানা নেই। তবে, শরীরে একটি নির্দিষ্ট অণুর বেশিমাত্রায় উৎপাদন হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, যা মস্তিষ্কের একটি হরমোনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তন্দ্রাভাব বাড়িয়ে দেয়।

উপসর্গ এবং ঘুমানোর অভ্যাসের মূল্যায়ন করার জন্য পরিবারের সদস্যের উপস্থিতিতে বিশদে চিকিৎসাজনিত ইতিহাস জেনে নিলে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য পাওয়া যায়।

যে সমস্ত ওষুধের কারণে হাইপারসোমনিয়া হচ্ছে, তা দূর করতে ওষুধ বন্ধ করতে হতে পারে। চিকিৎসাজনিত অবস্থার অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয়ের উদ্দেশে আপনাকে হয়তো পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।

হাইপারসোমনিয়ার অনুসন্ধানে অন্তর্ভুক্ত :
● সারারাতে ঘুমানোর পরীক্ষা অথবা পলিসোমনোগ্রাফি (পিএসজি) টেস্ট
● মাল্টিপল স্লিপ লেটেন্সি টেস্ট (এমএসএলটি)
● জেগে থাকা বা সচেতনতা পরীক্ষার রক্ষণাবেক্ষণ

হাইপারসোমনিয়ার চিকিৎসাপ্রণালী নির্ভর করে উপসর্গ থেকে উপশম প্রদান এবং অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসার উপর। হাইপারসোমনিয়া রয়েছে এমন কিছু রোগীর জন্য অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং সচেতনতা-বর্ধক এজেন্টের মতো ওষুধ এবং কগ্নিটিভ বিহেভরিয়াল থেরাপি (সিবিটি) সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে

লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট

● ঘুমনোর ধরণে প্রভাব ফেলে এমন কারণ এড়িয়ে চলুন
● রাত অবধি জেগে কাজ করা বা রাতে সামাজিক কাজকর্মে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন
● মদ এবং ক্যাফিন জাতীয় জিনিস এড়িয়ে চলুন