হার্ট এটাক

সারাংশ

যে যে শারীরিক বিপর্যয়ের জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে হার্ট এটাক, ঠিক সময়ে তার চিকিৎসা না করলে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। হৃদযন্ত্রের পেশিসমূহে যে ধমনীর মাধ্যমে রক্ত প্রবাহিত হয় সেখানে কোনও কারণে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্র বিকল হয়। হৃদরোগের অন্যতম সাধারণ কারণ হল, ধমনীতে চর্বি বা স্নেহ পদার্থ যাকে বলা হয় প্লাক, জমা হয়ে যাওয়া। ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, মদ্যপান, এবং অলস জীবনযাত্রার সম্মিলিত কারণের জন্য হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটে। কার্ডিয়াক মার্কারের সঙ্গে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) করা হলে চূড়ান্ত (ম্যাসিভ) হৃদরোগ নির্ণয় করা সহজ হয়। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে ওষুধের সঙ্গে করোনারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা প্রয়োজন, এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাইপাস অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া করা হয়।

উপসর্গ

● বুকের বাঁদিকে ব্যাথা যা ক্রমে বাম বাহু, চোয়াল, কাঁধ, এবং অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে
● শ্বাসকষ্ট
● বমিভাব
● বমি করা: অনেকেই মনে করেন বদহজমের কারণে বমি হচ্ছে এবং ঢেঁকুর তুললে বা হজমের ওষুধ (অ্যান্টঅ্যাসিড) খেলে ঠিক হয়ে যাবে
● অস্বাচ্ছন্দ্য
● ত্বক বিবর্ণ হওয়া
● দুর্বল নাড়ি
● রক্তচাপ ওঠাপড়া
● অস্থিরতা
● বিপর্যয়ের আশঙ্কা এবং দুশ্চিন্তা

চিকিৎসা

চিকিৎসার মধ্যে থাকবে আন্টি প্লেটলেট ওষুধ (যে ওষুধ রক্তবাহী ধমনীতে প্লেটলেট জমা হতে দেয় না), রক্ত পাতলা করার ওষুধ, অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্ট (রক্ত জমাট বেঁধে গেলে তা ভেঙে দেওয়ার ওষুধ), অক্সিজেন থেরাপি, এবং হৃদরোগের উপসর্গ কমাতে ব্যাথা কমানোর ওষুধ। রক্তচাপ কমানো এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ওষুধও দেওয়া হয়, যাতে বুকের ওপর চাপ কমে এবং অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক থাকে।

অস্ত্রোপচার

ওষুধের সঙ্গে নিম্নলিখিত প্রক্রিয়াগুলির যে কোনও একটি করা হতে পারে:

করোনারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি
করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাফির সঙ্গে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হতে পারে যখন বাধাপ্রাপ্ত ধমনীতে একটি স্টেন্ট বসানো হয়। ওই স্টেন্টের সাহায্যে ধমনী খুলে যায় এবং রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হয়।

করোনারি আর্টারি বাইপাস সার্জারি
বাইপাস সার্জারির সময় চিকিৎসক বাধাপ্রাপ্ত ধমনীর পাশে অস্ত্রোপচারের সাহায্যে শরীরের অন্য এলাকার সুস্থ ধমনী বা শিরা সেলাই করে রক্তপ্রবাহের নতুন একটি পথ খুলে দেবেন যাতে বাধাপ্রাপ্ত ধমনী এড়িয়ে রক্ত সঞ্চালন শুরু হয়।

লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট

● ​প্রতিদিন ব্যায়াম করুন, যেমন দৌড়নো, একজায়গায় দৌড়নো (জগিং), সাঁতার কাটা, এবং যোগ ব্যায়াম করা, যা করলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ভালরকম বাড়ে এবং রক্তচাপ কমে
● শরীরের ওজন স্বাস্থ্যকর রাখুন
● ধূমপান ছেড়ে দিন। কেউ ধূমপান করলে সেখান থেকে দূরে থাকুন
● খাদ্যে সোডিয়াম এবং স্নেহজাতীয় পদার্থ কম রাখুন। খাবারে ফল, সবজি, এবং ফাইবার বেশি থাকলে হার্ট ভাল থাকে
● নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং কিছুদিন অন্তর রক্তচাপ পরীক্ষা করান
● কর্মক্ষেত্রে এবং বাড়িতে মানসিক চাপের ভারসাম্য বজায় রাখুন

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক