অস্টিওআর্থারাইটিস
(হাড়ের বাত)

সারাংশ

অস্থি সন্ধিস্থলে গড়ে ওঠা ধীরে ধীরে প্রগতিশীল একটি রোগ হল অস্টিওআর্থারাইটিস যার ফলে অস্থি সন্ধিস্থলগুলি বেদনাদায়ক ও শক্ত হয়ে যায়, এবং এই রোগে সাধারণত মাঝবয়সী থেকে বয়স্ক ব্যক্তিরাই বেশি আক্রান্ত হন। বাইরে থেকে পড়া চাপ এবং জৈবরাসায়নিক পরিবর্তনের কারণে ভারবহনকারী অস্থি সন্ধিস্থলগুলি আক্রান্ত হলে তরুণাস্থিতে ভাঙন দেখা যায়। এটি কখনও কখনও অন্য ধরনের আর্থারাইটিসের সাথেও লক্ষ্য করা যায়। শরীরের যে কোনো অস্থি সন্ধিস্থলকে অস্টিওআর্থারাইটিস আক্রান্ত করতে পারে, তবে, সাধারণত হাতের, হাঁটু্র, নিতম্বের ছোট অস্থি সন্ধিস্থলগু্লি বেশি আক্রান্ত হয়।

উপসর্গ

● অস্থি সন্ধিস্থলে ব্যথা ও শক্তভাব
● পেশীর ভরের ক্ষয়ের সাথে সাথে পেশীর দুর্বলতাও দেখা যায়
● ক্ষতিগ্রস্থ অস্থি সন্ধিস্থলগুলি সঞ্চালনে সমস্যা, সীমিত দূরত্ব পর্যন্ত সঞ্চালনই সম্ভব হয়
● অস্থি সন্ধিস্থলগুলিতে সংবেদনশীলতা বা ফোলাভাব পরিলক্ষিত হয় ফলে সন্ধিগুলি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি স্থুল দেখায়
● অস্থি সন্ধিস্থলগুলিতে করকর শব্দ বা ভাব অথবা মৃদু, কর্কশ শব্দ অস্থি সন্ধিস্থলে
● দৈনন্দিন কাজকর্ম করা কঠিন হয়ে ওঠে
● আঙ্গুলগুলি বেঁকে যায়
● আক্রান্তস্থানে ব্যথাদায়ক ফোড়া বা তরলপূর্ণ ফোস্কা হতে পারে

চিকিৎসা

অস্টিওআর্থারাইটিসের চিকিৎসাসমূহ :

● ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা ● যথাযথ যন্ত্রপাতির সাহায্যে ও উপযুক্ত জুতো পরিধানের মাধ্যমে অস্থি সন্ধিস্থলগুলিতে চাপ কমানোর ব্যবস্থাগ্রহণ ● প্যারাসিটামল ● স্টেরয়েডবিহীন যন্ত্রণানাশক ওষুধ( এনএসএআইডি): ইবুপ্রফেন, নাপ্রক্সিন, সেলেকক্সিব, এটোরিকক্সিব, ও ডিক্লোফেনেক ● আফিমজাত ওষুধ (কোডিন) ● ক্যাপ্সিসিন ক্রিম ● স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন ● প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা (পিআরপি) ইঞ্জেকশন ● পুষ্টি সম্পূরক পদার্থ ● একজন ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে পরিকল্পনামাফিক ফিজিওথেরাপি নেওয়া ● ট্রান্সকিউটেনিয়াস বৈদ্যুতিক মাধ্যমে স্নায়ুতে উদ্দীপনা দান (টিইএনএস) ● গরম বা ঠান্ডা সেঁক নেওয়া ● চরম ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার দ্বারা নিরাময় সম্ভব, ক্ষতিগ্রস্থ সন্ধিস্থলের জোড় ● আর্থোপ্লাসটি ● আর্থোডিসিস ● অস্টিওটমি ● বিকল্প চিকিৎসার মধ্যে অন্তরভুক্ত ● আকুপাংচার ● অ্যারোমাথেরাপি

লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট

● আঘাত পেলে অস্থি সন্ধিস্থলগুলির অনবরত ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
● বয়সের সাথে ওজনের সামঞ্জস্য বজায় রাখুন

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক