অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার

সারাংশ

অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) হল একপ্রকার অসুস্থতা যা মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। এটি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই দেখা যেতে পারে। এই সমস্যায় আক্রান্ত মানুষ যুক্তিহীন অবসেশন (অনর্থক চিন্তার পুনরাবৃত্তি) এবং কম্পালসনের (সেই চিন্তা অনুযায়ী কাজ করার অদম্য ইচ্ছা) এক চক্রের মধ্যে আটকে পড়েন। এছাড়াও এর ফলে মানসিক চিত্র, বাসনা ও অবাঞ্ছিত চিন্তার সৃষ্টি হয় যা মানুষটির মানসিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে।

উপসর্গ

● মানসিক প্রতিচ্ছবি, বাসনা ও চিন্তার পুনরাবৃত্তি যা উদ্বেগের সৃষ্টি করে
● ধর্ম ও যৌনতা সম্পর্কে অত্যধিক নিষিদ্ধ চিন্তা
● বারবার একই কাজ করা, যেমন, গ্যাস বন্ধ আছে কিনা অথবা দরজায় তালা দেওয়া হয়েছে কিনা দিনে একশবার সেই খোঁজ নেওয়া
● জিনিসপত্রকে নিখুঁত বিন্যাসে রাখা, সুষম সজ্জায় অথবা অত্যন্ত নির্দিষ্ট রীতিতে রাখা
● বারংবার গোনা
● টিক ডিসঅর্ডার: আকস্মিক, পৌনঃপুনিক পেশী সঞ্চালন, যেমন কাঁধ ঝাকানো, চোখের পাতা ফেলা, মুখবিকৃতি। কিছু ভোকাল টিক দেখা যায়, যেমন গলায় শব্দ করা, গলা খাকরানো এবং বারবার নাক টানা
● নিজের অথবা অন্যদের প্রতি আক্রমনাত্বক চিন্তাভাবনা
● জীবাণু ও দূষণের ভয়ে অতিরিক্ত হাত ধোয়া বা পরিষ্কার করা

চিকিৎসা

শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষার মাধ্যমে ওসিডি নির্ণয় করা হয়। চিকিৎসক জিজ্ঞাসা করেন অবসেশন ও কম্পালসনের উপরোক্ত কতগুলি উপসর্গ রোগীর দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত করছে, দিনে অন্তত একঘন্টা সময় নষ্ট করছে অথবা মানসিক যন্ত্রণা সৃষ্টি করছে।
ওসিডির চিকিৎসায় নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে :

ওষুধ : মস্তিষ্কে রাসায়নিক ভারসাম্য ফেরাতে এন্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ দেওয়া হয়। ওসিডির উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিআপটেক ইনহিবিটর (এসএসআরআই) দেওয়া হয় যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন মাত্রা বৃদ্ধি করে।

সাইকোলজিকাল থেরাপি : এই থেরাপি অবসেসিভ চিন্তা ও ভীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ডীপ ব্রেন স্টিমুলেশন (ডিবিএস) : অন্তত পাঁচ বছরব্যাপী ওসিডি-তে ভুগছেন, এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এই চিকিৎসাপদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রোডের সাহায্যে হালকা বৈদ্যুতিক প্রবাহ পাঠিয়ে মস্তিস্ককে উদ্দীপ্ত করা হয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক